শিলচর, ৩ আগস্ট: শিলচরের নামী ও পুরনো হাসপাতাল শিবসুন্দরী নারীশিক্ষা সেবাশ্রমে এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা সামনে এসেছে। পুলক মালাকার নামে এক ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে নিজেকে গাইনোকোলজিস্ট বলে পরিচয় দিয়ে ভুয়া চিকিৎসা করে যাচ্ছিলেন।
তাকে ২৯ জুলাই, হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটার থেকে গর্ভবতী এক মহিলার অস্ত্রোপচারের সময় হাতেনাতে ধরে পুলিশ। বর্তমানে তিনি শিলচর থানার হেফাজতে রয়েছেন।
‘মুনাভাই এমবিবিএস’ নয়, বাস্তবের প্রতারক
বলাই বাহুল্য, এই পুলক মালাকার কোনও ডাক্তারই নন। তথ্য অনুযায়ী, তিনি মাধ্যমিক পরীক্ষাতেও পাশ করেননি। তবুও দীর্ঘদিন ধরে নিজেকে গাইনোকোলজিস্ট ও এমবিবিএস চিকিৎসক বলে দাবি করে আসছিলেন।
তদন্তে উঠে এসেছে, পুলক মালাকার বদরপুর পশ্চিম জংলা কালিবাড়ি রোড এলাকার বাসিন্দা। জীবনের শুরুতে তিনি সিডি ক্যাসেট ও চাপাতির ব্যবসা করতেন।
প্রশ্ন হলো,
- কীভাবে একজন অযোগ্য, অশিক্ষিত ব্যক্তি এত বড় একটি হাসপাতালে চিকিৎসকের ভূমিকায় নিযুক্ত হলেন?
- এই প্রশ্নের উত্তর এখন তদন্তের প্রধান বিষয়।
আইনি ব্যবস্থা
এই ঘটনায় শিলচরের পিপিএস ডিভিশনের আধিকারিক ডাঃ অভিজিৎ নেংতা তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধারায় মামলা দায়ের করেছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, তদন্তের অগ্রগতির ওপর ভিত্তি করে আরও ধারা যোগ করা হতে পারে।
ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই শহরের চিকিৎসা মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। সাধারণ মানুষের মধ্যেও আতঙ্ক ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।
বড় বড় প্রশ্ন উঠছে...
- একজন মাধ্যমিক ফেল ব্যক্তি কীভাবে এত বছর ধরে অস্ত্রোপচারের কাজ করে গেলেন?
- হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কি এসব জানতেন না?
- আর কতজন রোগী তার হাতে পড়েছেন?
এই ধরনের ভুয়া ডাক্তারদের রুখতে প্রশাসনের ভূমিকা কতটা কার্যকর?
উপসংহার
এই ঘটনাটি আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ভেতরের দুর্বলতা ও অব্যবস্থার ছবি স্পষ্ট করে তোলে। একজন অযোগ্য ব্যক্তি যদি বছরের পর বছর হাসপাতালে অপারেশন থিয়েটারে ঢুকে রোগীর জীবন নিয়ে খেলতে পারে, তবে সাধারণ মানুষের জীবন কতটা নিরাপদ, তা ভাবার বিষয়।
সময় এসেছে — মানুষকেও সচেতন হওয়ার, অন্ধ বিশ্বাস নয়, যাচাই করে চিকিৎসা নেওয়ার।